ডেস্ক নিউজ:
নির্বাচন কমিশনে আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনের বিএনপি প্রার্থী বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনের আপিল শুনানির তৃতীয় দিন শনিবার বিকেলে তার প্রার্থীতা বৈধ ঘোষণা করা হয়।

এর আগে গত ২ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে রিটার্নিং কর্মকর্তারা ঋণ খেলাপি হওয়ায় আসলাম চৌধুরীর প্রার্থী বাতিল করে। পরে গতকাল বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয় আসলাম চৌধুরীর ভাই ইসহাক চৌধুরীকে। কিন্তু আজ আসলাম চৌধুরী প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ায় তিনিই বিএনপি প্রার্থী থাকছেন বলে জানিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড।

বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী রাজনৈতিক, রাষ্ট্রদ্রোহ ও ব্যাংক ঋণ মামলাসহ অসংখ্য মামলায় মাথায় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আছেন।

অন্যদিকে, গতকাল চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন কারাবন্দি বিএনপি নেতা কুতুব উদ্দিন বাহারকে দেয়া হলেও আজ সন্ধ্যায় সে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে আসনটি ২০ দলীয় জোটের শরিক দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে (এলডিপি) ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখানে প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক বিএনপি নেতা ও বর্তমান এলডিপি নেতা নুরুল আলম।

এদিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা বলছেন, আসলাম চৌধুরীর মত হেভিওয়েট প্রার্থী মানোনয়ন ফিরে পাওয়ায় চট্টগ্রামে নতুন প্রার্থী নিয়ে সে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা কিছুটা লাঘব হলো।

অন্যদিকে, রাঙ্গুনিয়া আসনটি এলডিপিকে ছেড়ে দেয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন আসনটি এলডিপিকে যদি ছেড়েই দেবে, তবে কেন গতকাল চূড়ান্ত মনোনয়নে বিএনপি প্রার্থী কুতুব উদ্দিন বাহারের নাম ঘোষণা হলো।

তবে অনেকে মনে করেন, ড. হাসান মাহমুদের মতো শক্ত আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সঙ্গে লড়াই করতে একজন অভিজ্ঞ প্রার্থীর দরকার ছিল। তাই প্রার্থী হিসেবে সাবেক বিএনপি নেতা ও বর্তমান এলডিপি নেতা নুরুল আলম প্রার্থী হওয়ায় এ আসনে চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

উল্লেখ্য, রাঙ্গুনিয়ার শাসক পরিবর্তন হয়েছে বারবার, তেমনি স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনীতিতেও এ আসনে কোনো দলের একক আধিপত্য নেই। এখানে কখনও আওয়ামী লীগ, কখনও বিএনপি আবার কোনো সময় জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।

এই আসন থেকে মুসলিম লীগের টিকিটে একবার (১৯৭৯) এবং বিএনপির টিকিটে দুবার (১৯৯৬ ও ২০০১) নির্বাচিত হন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়া সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৫ দলীয় জোটের মনোনয়নে নির্বাচিত হন কমিউনিস্ট পার্টির মোহাম্মদ ইউসুফ। জাতীয় পার্টি থেকে এ আসনে ১৯৮৬ সালে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং ১৯৮৮ সালে নজরুল ইসলাম নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ড. হাছান মাহমুদ। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও তিনি আসনটি ধরে রাখেন।